পৃথিবীতে শুরু থেকে শুরু করে আজ প্রযন্ত যতগুলো রোগ আবিষ্কৃত হয়েছে সেই সকল রোগকে পিছনে ফেলে এগিয়ে আছে উচ্চরক্তচাপ নামের এক জটিল ধরনের রোগ। এই রোগটি শরীরে হয়ে শুধু যে এই রোগের দ্বারা ক্ষতি সাধন করছে তা নয়, বরং এই রোগ শরীরে হয়ে সৃষ্টি করছে ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ আরও অনেক অনেক ধরনের জটিল রোগ কোন একজন রোগীর ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন জটিল রোগ আছে অথচ উচ্চরক্তচাপ নেই তা যেন এক আকাশ
কুসুম কল্পনা।কিন্তু কি এই উচ্চরক্তচাপ আর কেনই বা আমরা এই রোগের রোগী হচ্ছি তা সম্পর্কে সকলের ই জানা দরকার।
উচ্চরক্তচাপঃ সাধারণত রক্ত হৃদপিন্ডের সংকোচন প্রসারণের কারণে রক্তনালির ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় রক্তনালির গাত্রে যে চাপ প্রদান করে তাকেই উচ্চরক্তচাপ বলে। সাধারনভাবে, যদি কোনও একজনের হৃদ-সংকোচন বা সিস্টোলিক রক্ত চাপ উভয় বাহুতে ১৪০ মি.মি পারদ অথবা উপরে থাকে (চাপের একটি একক) কিংবা হৃদ-প্রসারণ বা ডায়াস্টলিক চাপ ৯০ মি.মি পারদ অথবা উপরে থাকে,তাহলে তার উচ্চ রক্ত চাপ বলা যেতে পারে।
উচ্চরক্তচাপের কারনঃ
কিডনিজনিত রোগঃ সৃষ্ট কারনজনিত উচ্চরক্তচাপের প্রায় ৭৫% কিডনিজনিত রোগে তৈরি।গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস, পলিআর্টেরাইসিস নভোসা, পলিস্টিটিক কিডনি ডিজিস ইত্যাদি কারনে উচ্চরক্তচাপ হয়।
এছাড়াও,
সাধারণত মানুষের ৪০ বছরের পর থেকে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে যদি
- অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
- পরিবারে কারও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
- নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করলে,মানসিক চাপে থাকলে
- প্রতিদিন ছয় গ্রাম অথবা এক চা চামচের বেশি লবণ খেলে
- ধূমপান বা মদ্যপান বা অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাদ্য/পানীয় খেলে
- দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে।
উচ্চরক্তচাপের লক্ষনঃ
উচ্চ রক্তচাপের একেবারে সুনির্দিষ্ট কোন লক্ষণ সেভাবে প্রকাশ পায় না। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণের মধ্যে রয়েছে:
- প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করা, মাথা গরম হয়ে যাওয়া এবং মাথা ঘোরানো
- · ঘাড় ব্যথা করা
- · বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
- · অল্পতেই রেগে যাওয়া বা অস্থির হয়ে শরীর কাঁপতে থাকা
- · রাতে ভালো ঘুম না হওয়া
- · অনেক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলা
অন্যান্য অঙ্গে জটিলতাঃ
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গে জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদযন্ত্রের পেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং এর ফলে দুর্বল হৃদযন্ত্র রক্ত পাম্প করতে না পেরে ব্যক্তির হৃতপিণ্ড কাজ বন্ধ করতে পারে বা হার্ট ফেল করতে পারে।এছাড়া, এমন সময় রক্তনালীর দেয়াল সঙ্কুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও থাকে।উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, মস্তিষ্কে স্ট্রোক বা রক্তক্ষরণও হতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।
চিকিৎসাঃ
- এমলোডিপিন ( Amlodipin ) একটি ডাই হাইড্রোপাইরিডিন ক্যালসিয়াম বিরোধী ঔষধ, যার দীর্ঘস্থায়ী কার্যকারীতা রয়েছে। এর সাথে আবার অন্য ঔষধের সংমিশ্রন করেও বাজারজাত করা হয়। যেমন – এমলোডিপিন ও এটিনোলল / এমলোডিপিন ও ওলমেসারটান / এমোডিপিন ও বিসোপ্রোলল ইত্যাদি
- লোসারটেন পটাশিয়ামঃ সকল প্রকার উচ্চরক্তচাপে ব্যবহার করা যায়। ২৫/৫০/১০০ মিগ্রা এর হয়ে থাকে, সাধারণত রাতে ১টি করে খেলেই হয়।
জীবনযাপনে পরিবর্তন আর নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এজন্য কয়েকটি বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে:
- খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়া
- ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
- নিয়মিত ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম করা
- মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা কম করা
- মাংস, মাখন বা তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া অতিরিক্ত কোলেস্টোরেল যুক্ত খাবার খাওয়ার কারণেও রক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। কারণ, রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টোরেল রক্তনালীর দেয়াল মোটা ও শক্ত করে ফেলে। এর ফলেও উচ্চ রক্তচাপ দেখা যেতে পারে।এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ হলে অতিরিক্ত কোলেস্টরেল জাতীয় খাবার পরিহার করে ফলমূল শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। সুতরাং, উচ্চরক্তচাপ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, আমাদের একটু সচেতনতা এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবনধারা ও খাদ্যাভাসই এই রোগের ঝুকি কমিয়ে দিবে অনেকাংশে।
লেখকঃ
ইশরাত জাহান ইশিতা
২য় বর্ষ,১ম সেমিস্টার
৭ম ব্যাচ,ফার্মেসী বিভাগ, মাভাবিপ্রবি
The very next time I read a blog, Hopefully it wont disappoint me as much as this one. After all, I know it was my choice to read through, nonetheless I really believed you would have something helpful to talk about. All I hear is a bunch of crying about something that you could possibly fix if you werent too busy searching for attention.