অস্টিওপরোসিসঃ অস্টিও মানে হচ্ছে হাড়। পরোসিস মানে ছিদ্র ছিদ্র হয়ে যাওয়া। স্বাভাবিক হাড় যখন ছিদ্র ছিদ্র হয়ে যায় সেটাকে অস্টিওপরোসিস বলে। আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে সেটা হচ্ছে কাঠের ভেতরে ঘুণ পোকা যেমন ঢোকে আর ভিতের ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে কেটে দেয় ,তখন সেটা অল্পআঘাতে অথবা অল্প চাপে সেটা ভেঙে যায়। ঠিক একি রকমভাবে আমাদের হাড়গুলো ভেঙে যায়।
যাদের অস্টিওপরোসিস হয়ঃ বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের সাধারণত এ রোগটা হয়ে থাকে। অনেক বয়স্ক পুরুষ আছে যারা বহুদিন ধরে স্টেরয়েড ঔষুধ সেবন করেন তাদের এবং মহিলাদের মেনোপস হবার পর এই রোগ হবার সম্ভাবনা বেশিই থাকে। ইস্ট্রোজেন, টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে, থাইরয়েড ও প্যারাথাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেশি হলে হাড়ক্ষয়ের প্রবণতা বাড়ে। এই রোগের পারিবারিক ইতিহাসের ঝুঁকি বেশি। এছাড়া যারা পরিশ্রম কম করে, সারাদিন রুমে শুয়ে বসে কাটিয়ে দেয় অথ্যাৎ কায়িক পরিশ্রম কম করে তাদের এই রোগ হবার সম্ভাবনা বেশি। আর আর্থ্রাইটিসে রোগ যাদের আগে থেকেই রযেছে তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
লক্ষ্মণঃ অস্টিওপোরোসিসের জন্য কিছু লক্ষণ আমরা আগে থেকেই অনুমান করতে পারি, সেটি হলো, সারা শরীরে একটু একটু ব্যথা অনুভূত হবে। হাড়গুলোতে একটু একটু ব্যথার সৃষ্টি হবে । বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর হার বাড়তে থাকে। আর তখন বোধগম্য হয় হাড় নরম হয়ে গেছে। আর তখনই এই সমস্যার সূত্রপাত হয়ে থাকে।
অস্টিওপরোসিস হলে করণীয়ঃ অস্টিওপরোসিস বর্তমানে নীরব ঘাতকে পরিণত হচ্ছে। এই রোগ ঠেকাতে হলে করতে হবে নিয়মিত ব্যায়াম, নিয়মিত ব্যায়ামে হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে, আর হাড়ের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে জয়েন্টগুলোকে সচল রাখে। শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে হাড়ক্ষয় কমায়।
ঝুঁকির কারণগুলোঃ অতিরিক্ত মদ্যপান, ধূমপান, ভিটামিন ডি এর অভাব, অপুষ্টিতে ভুগা, দেহের অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, ভারী ধাতু সমূহ, কোমল পানীয়, বহুদিন ধরে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহার করা। অস্টিওপরোসিস এর চিকিৎসাঃ ইস্ট্রােজেন ও হরমোন প্রতিস্থাপন,বিস্ফস্ফোনেটস,ক্যালসিটোনিন,সোডিয়াম ফ্লোরাইড, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি।
প্রতিকারঃ
# বৃদ্ধ অবস্থায় পরিণত হলে দৈনিক ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা উচিত।
#দুধ ও দুগ্ধযাত জাতীয় দ্রব্য বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা।
# ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার,,সবুজ শাকসবজি, কমলার জুস, খাবার খাওয়া
#ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা
#নিয়মিত ব্যায়াম করা।
#সুষম আশ যুক্ত খাবার গ্রহণ করা।
লেখকঃ মোঃ তাহেরুল ইসলাম
৩য় বর্ষ-১ম সেমিস্টার, ফার্মেসী ৬ষ্ঠ ব্যাচ, মাভাবিপ্রবি।