বর্তমান প্রেক্ষাপটে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স রোধে শুধু মাএ প্রয়োজনে এর ব্যবহারকে নির্দেশ করে উপরের বাক্যটি।তবে তার আগে এন্টিবায়োটিক কী জানতে হবে। এন্টিবায়োটিক শব্দটির সাথে কম বেশি আমরা সবাই পরিচিত,সেইসাথে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স শব্দটিও আমাদের অচেনা নয়।
আবিষ্কার: ১৯২৮ সালে আলেকজান্ডার ফ্লেমিং লক্ষ্য করলেন ছএাকের উপস্থিতি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বাধাগ্রস্ত করে। ফ্লেমিং ছএাক থেকে নিংসৃত পদার্থের নাম দিলেন পেনিসিলিন। প্রথম বানিজ্যিক ভাবে পাওয়া এন্টিব্যাকটেরিয়াল ছিলো প্রন্টোসিল,একটি সালফোনামাইড যা জার্মান জৈব রসায়নবিদ গেরহার্ড ডোমাগক তৈরি করে।তবে ১৯৪০-১৯৬২ কে এন্টিবায়োটিকের সোনালী যুগ বলা হয়। বর্তমানে ব্যবহৃত অধিকাংশ এন্টিবায়োটিক শ্রেনী এই সময়ের আবিষ্কৃত। এন্টিবায়োটিক কী: এন্টিমাইক্রোবিয়াল ড্রাগ বা এন্টিবায়োটিক এক প্রকার ঔষধ যা ব্যাকটেরিয়ার দৈহিক বৃদ্ধি ও বংশবিস্তার রোধ করে এবং মানুষ ও পশুর উভয়ের শরীরেই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে।তবে ভাইরাসের ক্ষেএে এর প্রভাব পরিলক্ষিত নয়।
Top 10 list of antibiotics: · Penicillin · Tetracycline · Cephalosporin · Quinolines · Lincomycin · Macrolides · Sulfonamides
এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কী: এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর থেকেই যেমন মেডিকেল বিশ্বে টপ অফ দা টক ছিলো, ইদানিং কালে তা বেশ পরিলক্ষিত হয় তবে তা মোটেও ইতিবাচক নয়। কিছু ব্যকটেরিয়া আছে যা এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স, অর্থাৎ এন্টিবায়োটিক সেই সব ব্যাকটেরিয়াকে মারতে পারে না বা তাদের সংক্রমিত হবার প্রবনতাকে নষ্ট করতে পারে না। রেজিস্ট্যান্স এমন এক অবস্থা তখন ব্যাকটেরিয়া এন্টিবায়োটিকের উপস্থিততে অভিযোজিত হয় এবং নিজেদের স্বাভাবিক গতি তথা বংশবিস্তার করতে পারে।বলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে ক্রমশ মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স সংক্রান্ত সম্যসার কারনে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর কমপক্ষে ০.৭ মিলিয়ন মৃত্যু ঘটে,ধারনা করা হচ্ছে যার পরিমান ২০৫০ এ দাড়াবে ১০ মিলিয়ন। রেজিস্ট্যন্সির কারন: এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের প্রধান কারন হিসেবে ধরা হয় এন্টিবায়োটিকের ব্যাবহার। শুধু ব্যাবহার বললে ভূল হবে, অতিরিক্ত ব্যবহার বলা চলে।যখন আমরা সাধারন কোন অসুখে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করি কিন্তু প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কোর্স কমপ্লিট না হয় -তখন সর্বোচ্চ পরিমানে ব্যকটেরিয়া মারা যায় তবে কিছু প্রতিরোধী ব্যকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে এমনকি নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও করতে পারে। এন্টিবায়োটিকের এই অনিয়মিত ব্যবহার প্রতিরোধী ব্যকটেরিয়াকে আরও সাধারণ করে তোলে। এন্টিবায়োটিকের যএতএ ব্যাবহার যত বাড়বে ব্যকটেরিয়ার প্রতিরোধী হওয়ার সম্ভাবনা ততো বেশী। এছাড়াও জিন পরিবর্তন,পরিব্যাক্তি বা অপসারনের মাধ্যমে ও এক প্রজাতির ব্যকটেরিয়ার এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স জিন অন্য প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া গ্রহন করতে পারে যার ফলে এন্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা কমে যায়।
বাংলাদেশে প্রভাব: উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে এর প্রভাব দিন দিন ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে। বাংলাদেশে ২০১৮ সালে সবচেয়ে বড় আইসিইউ ইউনিট BSSMU তে ৯০০ রোগীর মধ্যে ৪০০ জন রোগী মারা যায় যার মধ্যে ৮০% এন্টিবায়োটিকের প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া /ছএাক সংক্রমনের জন্য দায়ী। রিপোর্টে আরও বলা হয় যে বাংলাদেশে আ্যমপিসিলিন, আ্যমোকিক্লাভ,সিপ্রোফ্লাক্সাসিন এবং কোন ট্রাই মক্সাজোলের প্রতিরোধ ছিল ১০০%,৫৮%,৬৭.৪%,৭২.৭%। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে মাএ ৮% এন্টিবায়োটিক চিকিৎসকের পরামর্শে বিক্রি করা হয়।
এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সি কেন বাড়ছে: ওভার কনজামসন অব এন্টিবায়োটিক’ অত্যাধিক মাএায় এর ব্যাবহার এবং কোর্স কমপ্লিট না করার ফলে ব্যকটেরিয়াগুলো এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল শিখে ফেলে,তার ফলে কিছু ব্যকটেরিয়া প্রতিরোধী হয়ে ওঠে এবং হোস্টের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। পূর্বের আলোচনা অনুযায়ী ব্যকটেরিয়া তার রেজিস্ট্যান্স জিন নিয়ে অন্য হোস্টের মধ্যে ও সংক্রমিত হতে পারে। দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা,নন-থেরাপিউটিক ব্যবহা, সহজলভ্যতা,অঙ্গতা এসব কতিপয় কারনে বাংলাদেশে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সি বৃদ্ধি পাচ্ছে। রেজিস্ট্যান্সি দূর করার উপায়: সাধারন জ্বর সর্দিতে মৃত্যু ঘটার আগেই আমাদের এই বিষয়ে সচেতন হওয়া আবশ্যক।পৃথিবী ব্যাপী এ ব্যাপারে বিভিন্ন নিয়ম কানুন