কোলেস্টেরল কীঃ
কোলেস্টেরল হলো লিপিড নামক নির্দিষ্ট জৈব অণুর একটি শ্রেণী। প্রাণী কোষে এটি সংশ্লেষিত হয় এবং প্রানী কোষের ঝিল্লির একটি অপরিহার্য কাঠামোগত উপাদান।
কোলেস্টেরল দেহের রক্তের মাধ্যমে বাহিত হয়ে প্রোটিনের সাথে সংযুক্ত হয়। প্রোটিন এবং কোলেস্টেরল এর সংমিশ্রণকে লিপোপ্রোটিন বলা হয়।
প্রকারভেদঃ
★★প্রাণীদেহে দুই ধরনের লিপোপ্রোটিন পাওয়া যায়-
১/ কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন বা এলডিএলঃ কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন কোলেস্টেরলকে প্রায়ই খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়। কারণ এটি রক্ত নালীর দেয়ালে সঞ্চিত হয়ে রক্তনালী অবরুদ্ধ করে দেয়। এ কারণে হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্য সমস্যার সম্ভবনা বা আশঙ্কা বাড়ায়।
২/বেশি ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন বা এইচডিএলঃ এইচডিল কোলেস্টেরলকে প্রায়ই ভালো কোলেস্টেরল হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এটি খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে পারে।
কোলেস্টেরল কি খারাপ?
উত্তর হলো না। দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ কোলেস্টেরল ব্যতিত অচল হয়ে পরে। ভালো কোলেস্টেরল গ্রহণ ও খারাপ কোলেস্টেরল বর্জন করাটাই সঠিক কাজ। এইচ ডি এল বাড়াতে জীবনযাত্রার পরিবর্তন অনেক জরুরি। যেমন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধুমপান ছেড়ে দেয়া, অতিরিক্ত ওজন কমানো হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়া কোলেস্টেরল হতে মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ সেক্স হরমোন যেমনঃ টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন সংশ্লেষিত হয়।
তবে বিশেষভাবে এইচডিএল মাত্রা বাড়ায় এমন ঔষধগুলি হার্ট অ্যাটাকের হার কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।
★★★এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে নিচের খাবার গুলো খাদ্য তালিকায় যোগ করা যেতে পারে।
* শিম জাতীয়ঃ
দ্রবনীয় ফাইবার যুক্ত, মটরশুঁটি শুধু কোলেস্টেরল শোষনকে বাধা দেয় এবং খারাপ কোলেস্টেরলকেও শরীর থেকে বের করে দেয়। উপরন্তু, এর প্রোটিন অংশ গোশতের মতো উচ্চ চর্বিযুক্ত প্রাণীজ প্রোটিনের বদলি খাবার উপাদান হিসেবে যথেষ্ট উপকারী।
* কমলালেবুঃ
দ্রবনীয় ফাইবার সমৃদ্ধ , রসালো এবং তাজা ফল মানেই কমলালেবু। এই পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্য ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরল উভয়কেই কমায়, পাশাপাশি ধমনীতে প্লাক জমা হতে বাধা দেয়।এছাড়া এই লেবুজাতীয় ফলটিতে প্রচুর পরিমানে ফলিক এসিড থাকে যা স্বাস্থের জন্যে খুবই জরুরি।
* সয়াবিনঃ
এই নিরামিষ খাবারটি পুষ্টিগুনে গোশতের সমতুল্য, সয়াবিন অসম্পৃক্ত ফ্যাট, ফাইবার এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ । এটি গ্রহণ লিপিড প্রোফাইলের উন্নতি করতে পারে।
*ওটসঃ
বিটা গ্লুক্যানে সম্বৃদ্ধ। ওটস কোলেস্টেরল শোষণ মাত্রা কমায়। এটি রক্ত প্রবাহের কোলেস্টেরল অনুগুলোতে নিজেকে আবদ্ধ করে এবং শরীর থেকে তাদের সরিয়ে দেয়।
* জলপাইয়ের তেলঃ
এটি এইচডিএল এর মাত্রা বাড়ায়। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন ই এবং পলিফেনল আছে যা এলডিএল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
* কাঠবাদাম তেলঃ
ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডে পূর্ণ যা এইচডিএল মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে, অন্যদিকে কাঠবাদাম এর ফ্লাভোনয়েডস এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাটগুলো এলডিএল কমাবার মতো বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
* আপেলঃ
এমন একটি ফল যা ডাক্তারকে বহু দুরে রাখে।এতে উপস্থিত ফাইবার এবং ফাইটোস্টেরল এলডিএল কমাতে সাহায্য করে, এছাড়া এই সুস্বাদু ফলের খোসায় পাওয়া যায় চমৎকার প্যাক্টিন এবং পলিফেনল দ্রব্য যাতে এইচডিএল বৃদ্ধি পায়।
লেখকঃ মারিয়া মৌ
বিভাগঃ ফার্মেসী
সেশনঃ ২০১৭-২০১৮