পবিত্র রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, জীবনধারণ ও ওষুধের নিয়মে অনেক পরিবর্তন ঘটে৷ এক মাসের জন্য এই পরিবর্তনের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হয় ৷
রোজা পালনের কারণে ডায়াবেটিক রোগীরা কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন। যেমন-
১. হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করা স্বল্পতা,
২. হাইপারগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করা অত্যধিক বেড়ে যাওয়া,
৩. ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা,
৪. কিটো অ্যাসিডোসিস এবং
৫. থ্রম্বোসিস বা রক্ত জমাট বাঁধা।
রমজানে খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম :
• সাহরিতে না খেয়ে রোজা রাখা যাবে না ৷ সাহরিতে ভাত,সবজি, মাংস, মাছসহ একটি পূর্ণাঙ্গ খাবার খেতে হবে ৷
• ইফতারে ভাজাপোড়া ও তেলযূক্ত খাবার পরিহার করতে হবে ৷ ফলমূল খেতে হবে ৷ শরবত বা মিষ্টি জুস না খেয়ে ডাবের পানি, ফলের রস, লেবুপানি পান করতে পারেন।
• পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে ৷
রমজানে রক্তে সুগার পরিমাপ :
রমজান শুরু হওয়ার পূর্বে রক্তে গ্লুকোজ পরিমাপ করতে হবে ৷ কিন্তু রমজান মাসেও সময় নির্ধারণ করে রক্তে শর্করা পরিমাপ করতে হবে ৷ বেশি খারাপ লাগলে বা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে রক্তে গ্লুকোজ মাপতে হবে। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলো হচ্ছে দুর্বল লাগা, মাথা ঝিমঝিম করা, চোখে ঝাপসা দেখা, ঘাম হওয়া, হাত কাঁপা, মাথা শূন্য বোধ হওয়া ইত্যাদি।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
• রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ৩.৯ মিলিমোল বা ৭০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের কম হয়ে গেলে ৷
• রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ১৬.৬ মিলিমোল বা ৩০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি পাওয়া গেলে ৷
বেশি খারাপ অবস্থা হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ৷
রমজানে ইনসুলিন ও ওষুধ: রক্ত পরীক্ষা করে চিকিৎসকের সঙ্গে রমজানে ওষুধ বা ইনসুলিনের ডোজ এবং শর্করা পরিমাপের সময়সূচি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে ৷ গ্লুকোজ এর মাত্রা অনুযায়ী একেকজনের একেক রকম ডোজ হতে পারে ৷ সাধারণভাবে মেটফরমিন, ইনক্রিটিন গোত্রের ওষুধের মাত্রায় তেমন কোনো পরিবর্তন দরকার হয় না, কেবল সময়সূচি পরিবর্তন করলেই চলে। কিন্তু সালফোনাইল ইউরিয়া গোত্রের ওষুধ বা ইনসুলিনের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত জরুরি।
লেখকঃ স্বর্ণা হক,
৩য় বর্ষ-১ম সেমিস্টার,
ফার্মেসী বিভাগ, মাভাবিপ্রবি।