হেমানজিওমা শিশুদের একটি বিরল প্রজাতির রোগ। এটি শিশুদের জন্মের পরপরই দেখতে পাওয়া যায়। মানবদেহে রক্ত সংবহনের জন্য বিভিন্ন ধরনের রক্তনালী বিদ্যমান থাকে যা দেহের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে রক্ত রক্ত সরবরাহ করে থাকে। যদি দেহের কোন কারনে অস্বাভাবিক ভাবে এসকল রক্তনালীকার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় তখন রক্তনালীগুলো একত্রে ঘনীভূত হয়ে লাল লাল ফুসকুড়ির মতো সৃষ্টি করে যাকে নন-ক্যান্সার টিউমারও বলা হয়ে থাকে। এটি একটি উজ্জ্বল লাল বর্ণের পিন্ড যা কিছুটা রাবারের মতো যা হাত দিয়ে চাপ দিলে ডেবে যায় আবার হাত সরিয়ে নিলে উপরে উঠে আসে। অনেক সময় বর্ণ পরিবর্তন করে স্ট্রবেরির মতো রং ধারণ করে থাকে যার কারণে স্ট্রবেরি মার্কও বলা হয়।
এটি সাধারণত মুখ, ত্বক, বুক বা পিঠে হয়ে থাকে। এছাড়া অনেক সময় আমাদের দেহের অভ্যন্তরীন অঙ্গ সমূহেও প্রভাব বিস্তার করে। যেমন –
১.লিভারে হতে পারে
২.ব্রেইন এ হতে পারে
৩.শ্বাসনালীতে হতে পারে।
এই রোগের সঠিককারণ এখনো নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি, তবে এটা নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক উচ্চতর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হয় এটি বংশগত ভাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মতে ছড়িয়ে যাচ্ছে।
এই রোগের ফলে যেসব জটিলতাগুলো দেখা দিতে পারে –
১.রক্তক্ষরণ হতে পারে
২.শ্বাস নিতে সমস্যা হয়
৩.দৃষ্টিশক্তি কমে যায়
৪.মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয় (প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে)
৫.খাবারে অরুচি দেখা যায়। প্রতি বছর সারাবিশ্বে হেমানজিওমা এর ঘটনার সংখ্যা প্রায় ১০বিলিয়ন।স্বাভাবিক অবস্থায় কিছু না হলেও শ্বাসনালীর সমস্যাজনিত কারণে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
চিকিৎসা : FDA এর অনুমোদন অনুসারে বিটা-ব্লোকার ড্রাগ,যেমন –propanolol hydrochloride ব্যাবহার করা যেতে পারে।এছাড়া কিছু ক্রিম বিদ্যমান রয়েছে যা শরীরে ব্যাবহার করা যেতে পারে। যদি কোন কারণে ঔষধ প্রয়োগে নিরাময় করা সম্ভব না হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সার্জারী করতে হবে।
লেখকঃ মোঃ হাসিবুল হাসান
ফার্মেসী ৬ষ্ঠ ব্যাচ, মাভাবিপ্রবি।