বর্তমান বিশ্বের বহুল আলোচিত ও নিঃশব্দে বিনাশকারী রোগ হিসেবে ডায়াবেটিস ব্যাপকভাবে পরিচিত।ডায়বেটিস এর গোলক ধাঁধাঁ থেকে তাই বাদ যায় না শিশু,বৃদ্ধ এমনকি গর্ভবতী নারীরাও। বিশ্বব্যাপী এই রোগ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সাল-এ ১৪ নভেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন। দেহের ইনসুলিন নামক হরমোন যদি রক্তের শর্করা বা সুগার নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ হয় তবেই আত্মপ্রকাশ ঘটে ডায়াবেটিসের।শুধুমাত্র তাই নয় , ইনসুলিন পরিমান মতো উৎপন্ন না হলে এবং ইনসুলিন রক্ত থেকে কোষে গ্লুকোজ পরিবহনে ব্যর্থ হলেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।গ্লুকোজের আধিক্য দেখা যায় বলে ডায়াবেটিস কে মধুমেহ বলা যায়।তাছাড়া নির্দ্বিধায় বলা যায় ডায়াবেটিস জিনগত ভাবে ছড়ায়, এটি ছোঁয়াচে নয়।
কাঁক ডাকা ভোরের রাস্তায় অসংখ্য মানুষকে ঘাম ঝরানো দৌড়ঝাঁপ করতে দেখলেই সহজেই আন্দাজ করা যায় এই রোগের প্রকৃত সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে ৪২ কোটিরও বেশি রোগী আছে যা গত ৩০ বছর আগের তুলনায় এই সংখ্যা এখন চার গুণ বেশি।দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রো-ক্যারিবিয়ান অথবা কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানদের এই ঝুঁকি বেশি থাকে। বহুলাংশে জীনগত এই রোগটি মূলত ২ প্রকার।যথাক্রমে
~টাইপ ওয়ান-যা মূলত অল্প বয়সীদের ক্ষেএে দেখা যায় যখন ইনসুলিন উৎপাদনে ব্যাহত হয় তখনএবং১০ শতাংশ এই টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত।
~টাইপ টু – যা বয়স্কদের মাঝে দেখা যায় যা ১৫-৩০ বছরের মধ্যে দেখা যায়এবং টাইপ টু তে হরমোনটি ঠিক মতো কাজ না। তাছাড়াও গর্ভবতী নারীরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে।এক গবেষণায় দেখা গেছে ৬ থেকে ১৬℅ গর্ভবতী নারীদের এই রোগ হতে পারে যা মোটেই অবহেলার বিষয় নয়।
সহজ কিছু লক্ষন দেখেই ডায়াবেটিসের সূএপাত অনুমান করা যায়ঃ °শরীর দূর্বল হওয়া °ঘন ঘন প্রস্রাব করা °ক্লান্ত বোধ করা °হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া °প্রদাহজনিত রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়া °দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়া °কাটাংশ দেরীতে শুকানো দেহ বিনাশকারী এই রোগকে সমূলে নির্মূল করা না গেলেও সহজ উপায়ে এর লাগামকে টেনে ধরা যায় কিছু নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে। পরিমিত খাবার গ্রহন,স্বাস্থ্য সচেতন ও শরীরচর্চার মাধ্যমে বাধ্যগত করা যায় ডায়াবেটিসকে। শাক সব্জি, ফল, এবং মোটা দানার খাদ্য শস্য,ওমেগা থ্রি তেল সমৃদ্ধ মাছ যেমন সারডিন-স্যামন গ্রহন এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয়,হোয়াইট পাস্তা, প্যাস্ট্রি, ড্রিংকস, চিনি, মিষ্টি ইত্যাদি বর্জনের মাধ্যমে এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। খুব ভীতিকর না হলেও এই রোগের পরিনতি মৃত্যুর মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেয়।রক্তনালির ক্ষতি, দৃষ্টি শক্তি হরানো,স্বায়ুর ক্ষতি,হার্ট অ্যাটাক,স্ট্রোক এসবের পেছনের মূলহোতা সেই বহুমূত্র রোগ।
কথায় আছে রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উওম। রোগ যেমন মানুষের স্বাভাবিক জীবনে বাঁধা হয়ে দাড়ায়,তেমনি বিজ্ঞানের আবিস্কার আমাদের জন্য আশির্বাদ বয়ে আনে যা ১৯২২ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ববাসী আবার অনুধাবন করেছে ইনসুলিন আবিষ্কারের মাধ্যমে।যার ফলে ১৪ বছর বয়সী লিওনার্ড থম্পসন মৃত্যুর দ্বার থেকে বেঁচে ফিরেছিল।এটি পৃথিবীতে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বাঁচার প্রদীপ হয়ে উঠে ।ইনসুলিন ছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যেটি বেশি কার্যকর সেই ঔষধটি মুখে নেওয়া যেতে পারে যা আরো একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন বলছে, যেখানে খুব দ্রুত খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ঘটছে সেখানে প্রায় ৮০℅ মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশের মানুষ এবং,উল্লেখ্য ২০১৬ সালে এই রোগে প্রায় ১৬ লাখ মানুষের মৃত্যু করেছে।কোন রোগকেই আর ভয় বা অবহেলা নয় কারণ মাথাব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলাটা কোন সমাধান নয়,বরং ভয়কে জয় করে,নিয়ামানুবর্তিতার মাধ্যমে বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে ডায়াবেটিসের বেপরোয়া লাগামকে শিথিল করে খুব সহজেই স্বাভাবিক জীবন-যাপন করা সম্ভব।
written by
Great informative and keep it up.
You are correct. Well Said.
Well said
Yes