আর্থ্রাইটিস এই শব্দটিতে এখন মোটামুটি সবাই পরিচিত। যার বাংলা অর্থ হচ্ছে বাত। আর্থ্রাইটিস হল মূলত অস্থিসন্ধির প্রদাহ যা এক বা একাধিক অস্থি সন্ধিকে আক্রান্ত করে। এটা শিল্পোন্নত দেশে ৫০-৫৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের মানুষের অক্ষমতা মূল কারণ।
আর্থ্রাইটিস এর প্রকারভেদ :
১.সন্ধিবাত/ গাঁট – ফোলানো বাত (Rheumatoid Arthritis)
২.অষ্টিওআর্থ্রাইটিস- অস্থিসংযোগ গ্রন্থি প্রদাহ (Osteoarthritis)
৩.গেঁটে বাত (Gout)
৪.কটিবাত বা কোমর প্রদাহ (Lumbago)
৫.মেরুদণ্ড প্রদাহ বা স্পন্ডিলাইটিস (Spondylitis)
৬.সায়াটিকা/কোটি স্নায়ুশূল(Sciatica)
৭.আম বাত/আর্টিকেরিয়া/অ্যালার্জি(Urticaria)
৮.বাতজ্বর (Rheumatic Fever)
৯.সংক্রামক বাত/সেপটিক আর্থ্রাইটিস।
আর্থ্রাইটিস কাদের বেশি হয়:
সাধারণত বয়স ৪০ পেরিয়ে যাওয়ার পরে মহিলারা এই বাতের রোগ আক্রান্ত হন। ওজন বেশি থাকলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে পুরুষেরাও এই রোগে আক্রান্ত হন। সাধারণত বয়স পঞ্চাশ পেরনোর পরে পুরুষদের বাতের রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
আর্থ্রাইটিস রোগের লক্ষণ:
* হাত ব্যাবহারে অক্ষমতা।
* হাটতে অক্ষমতা।
* অস্বাচ্ছন্দ্য এবং গ্লানি বোধ।
* ওজন কমে যাওয়া।
* পেশীর ব্যথা ও দুর্বলতা।
* পরিমিত ঘুম না হওয়া।
* শরীরের যে কোনো অংশ ফুলে ওঠা বা ফুলা ভাব হওয়া।
* বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা অনুভব করা।
রোগ নির্ণয়:
রোগের ইতিহাস ও রোগের ধরন দেখে রোগ নির্ণয় করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। যেমন এক্স-রে, জয়েন্ট অ্যাসপিরেশন ইত্যাদি।
প্রতিরোধের উপায় :
> শারীরিক তৎপরতা বাড়ানো। যেমন- বহুতল ভবনে ওঠার সময় মাঝেমধ্যেই লিফট ব্যবহার না করে সিড়ি ব্যবহার করা।
> মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
> শরীরের জয়েন্টগুলোকে নতুনভাবে জখম হতে না দেয়া এবং ইতোমধ্যেই জখমে আক্রান্ত হয়ে থাকলে তা দ্রুত সারিয়ে তোলা।
> প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ পানি খাওয়া। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া। ভিটামিনযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।
> ধূমপান না করা। মদপান না করা। কারণ মদ হাড়ের স্বাস্থ্য ও কাঠামো দূর্বল করে দেয়।
> নিয়মিত দুধ পান করুন।
> মেনোপোজ পরবর্তী নারীদের জন্য হরমোন প্রতিস্থাপন, অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
> সঠিক সাইজের ও নরম জুতা পরতে হবে।
> ঠান্ডায় আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও সমস্যা বেড়ে যায়, তাই ঠান্ডা থেকে দূরে থাকতে হবে। কুসুম গরম পানির সেঁক ব্যথা নিরাময়ে কার্যকরী।
চিকিৎসা :
এর কোন প্রতিকার নেই। চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের ধরনের উপর যার মধ্যে আছে ফিজিওথেরপি, জীবনধারন পদ্ধতির পরিবর্তন, ব্যায়াম, ওষুধ প্রয়োগ ইত্যাদি।
তথ্যসূত্রঃ
১. dailybangladesh.com
২. jugantor.com
৩. Wikipedia
লেখক : স্বর্ণা হক
বিভাগ : ফার্মেসী
সেশন : ২০১৮-১৯