বর্তমান সময়ে ক্যান্সার মানুষের কাছে এক ভয়ঙ্কর ব্যাধি। আগে ক্যান্সার সাধারণ মানুষের কাছে এত পরিচিত ছিল না কারণ রোগ নির্ণয়ের সুষ্ঠু ও বৈজ্ঞানিক উপায় বেশি জানা ছিল না। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত ক্যান্সারের প্রকৃত কারণ আবিষ্কার করতে পারেনি। সেই জন্য ক্যান্সার নামক এই ভয়ঙ্কর ব্যধির সঠিক প্রতিরোধ এবং প্রতিকার উদ্ভাবন করা সম্ভব হচ্ছে না।
মানুষ কখন, কিভাব্ কেন ক্যান্সরে আক্রান্ত হয় সেটার ব্যাখ্যাও দিতে পারেনা চিকিৎসা বিজ্ঞান। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলেছেন মন্দভাগ্য ক্যান্সারের মূল কারণ। আমরা আমাদের চারপাশে এমন অসংখ্য মানুষ দেখি যারা সারাজীবন ধূমপান করে, মদ্যপান করে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়না। অনেকে আবার ধূমপান না করেও বা সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করেও ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছেন! ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়াতে দৈবচক্র ছাড়া আর কিছুই বলার উপায় নেই।
দেখা যায় একই পরিবারের বহু সদস্য ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞান ক্যান্সারকে বংশগতি বা জিনগত রোগ বলে থাকে।
মরণব্যাধি ক্যান্সারের প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতন হওয়াই শ্রেয়। সুস্থ সুন্দর জীবন জীবনধারা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি রাখতে হবে। ক্যান্সার
প্রতিরোধে শাকসবজির ভূমিকা অনেক।
সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোকেমিক্যাল থাকে যা অতিরিক্ত পরিমাণ পুষ্টি সরবরাহ করে
এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
উজ্জ্বল রঙের শাকসবজি গুলোতে ক্যারোটিনয়েড উপস্থিত থাকে। গাজর আলফা এবং বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ। টমেটোতে থাকে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিন, ব্রকলি ও পালং শাক লুটিন এবং জ্যানথিন এর উৎস। হজমের সময় এই ক্যারোটিনয়েড গুলো আমাদের দেহে বিক্রিয়ার মাধ্যমে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়।
ভিটামিন এ আমাদের শরীরের জন্য একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীর ধারা উৎপাদিত হয় না, আমাদের গৃহীত খাদ্য থেকে প্রাপ্ত হয়। পরীক্ষা মূলক ভাবে প্রমানিত ক্যারোটিনয়েডস ক্যান্সার কোষের বিস্তার ও বৃদ্ধি রোধ করে।
শাকসবজিতে থাকে শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এন্টি অক্সিডেন্ট। এন্টিঅক্সিডেন্ট এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে ডিএনএ তে থাকা ক্ষতিকারক ফ্রিরেডিকেল গুলোকে নষ্ট করে এবং অস্বাভাবিক কোষগুলোকে স্বাভাবিক কোষে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে।
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ডেনমার্কের প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে প্রতিদিন ৩২ গ্রাম কাঁচা গাজর খেলে কলোরেক্টাল ক্যান্সার এর ঝুঁকি বহুলাংশে কমে যায়।
কুশিকাটার সবজি ক্যান্সের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। ব্রকলি ব্রাসেলস স্পাউটস বাঁধাকপি ফুলকপি শালগম সরিষা জাতীয় সবজির অন্তর্গত। এইসব সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভ্যালেন্টাইন মেলাটোনিন ফলিক এসিড ভিটামিন সি রয়েছে।
বিভিন্ন জনসংখ্যা বৃদ্ধি গবেষণায় বলা হয়েছে। কুশিকাটার জাতীয় শাকসবজি ফুসফুস ক্যান্সার, অগ্নাশয়ের ক্যান্সার কোলোরেক্টাল ক্যানসার র্যানস ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার পেটের ক্যান্সার মুক্ত সেকন্সেস এবং স্তন ক্যান্সার বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ সাদা করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ বারাসের অনন্যোপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ ও স্বাভাবিক উপায়ে হলো সুষম,ডায়েটে প্রাকৃতিক খাবার খাওয়া। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আঁশযুক্ত শাকসবজি রাখা উচিত প্রত্যেকটা মানুষের। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য শাকসবজি ভূমিকা বলে শেষ করা যাবেনা।
লিখেছেনঃ
জেরিন অন্তরা
শিক্ষার্থী
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।