স্ট্রোক কি?

রোগব্যাধি স্বাস্থ্য সংবাদ

স্ট্রোক কি?


চিকিত্‍সা বিজ্ঞানের ভাষায় স্ট্রোককে সেরিব্রভাসকুলার একসিডেন্ট বলা হয়। আমাদের দেশে ধারণা প্রচলিত আছে যে স্ট্রোক- হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের রোগ (Heart attack)। তা কিন্তু নয়। স্ট্রোক সম্পূর্ণ মস্তিকের একটি দুর্ঘটনা বা Brain এর রক্তনালীর জটিলতাজনিত মারাত্মক একটি সমস্যা। এ দুর্ঘটনায় মস্তিকের রক্তনালী বন্ধ হতে পারে আবার ছিঁড়েও যেতে পারে।

স্ট্রোক প্রধানত দুই প্রকার :


(১) ইস্কেমিক স্ট্রোক (Ischemic stroke) : এই ধরনের স্ট্রোকে Brain এ আঞ্চলিকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মস্তিকের আক্রান্ত এলাকাটি রক্ত পায় না এবং টিস্যু মারা যায়।

(২) হেমোরেজিক স্ট্রোক(Hemorrhagic) : এখানে রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে রক্ত মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং মস্তিস্কের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে মস্তিস্ক তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ ধরনের রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যুহার ৫০%

স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি যাদের বেশি
৬০ বছরের বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ স্ট্রোক। যদিও বৃদ্ধ বয়সে স্ট্রোক বেশি হয়, কিন্তু বর্তমানে অল্প বয়সে স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার ঘটনাও ঘটছে। নারীর চেয়ে পুরুষদের মধ্যেই স্ট্রোকের প্রবণতা সচরাচর বেশি দেখা যায়। এর নানা কারণ আছে। এক পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের প্রায় ২ কোটি মানুষ প্রতি বছর ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।আর বিশ্বে প্রতি ৪ জনে একজন ব্যক্তি যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন।

স্ট্রোকের লক্ষণ এবং উপসর্গ :

স্ট্রোকের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি প্রায়ই দ্রুত বিকাশ লাভ করে।এমনকিকয়েক ঘন্টা বা এক দিনের মধ্যে বিকাশ করতে পারে।

উপসর্গের ধরন নির্ভর করে স্ট্রোকের ধরন এবং মস্তিষ্কের যে অংশে আক্রান্ত হয়েছে তার উপর।  উপসর্গ কতক্ষণ স্থায়ী হয় এবং কতটা তীব্র হয় তা বিভিন্ন মানুষের মধ্যে পরিবর্তিত হয়।

সাধারণত যে ধরনের লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা যায়, সেগুলো হচ্ছে-

  • আকস্মিক দুর্বলতা প্যারালাইসিস (নড়াতে না পারা) বা মুখ, বাহু বা পায়ের অসাড়তা,বিশেষ করে শরীরের একপাশেঅসাড়তা
  • কথা বলতে বা বুঝতে সমস্যা
  • এক বা উভয় চোখে দেখতে সমস্যা
  • শ্বাসকষ্ট
  • মাথা ঘোরা,
  • হাঁটতে সমস্যা,
  • ভারসাম্য বা সমন্বয় হারানো
  • হঠাৎ এবং তীব্র মাথাব্যথা

ঝুঁকির কারণ

উচ্চ রক্তচাপ হলো স্ট্রোকের প্রধান ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান। অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলোহচ্ছে-

  • বেশি কোলেস্টেরল
  • ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ
  • ধূমপান
  • স্থূলতা
  • মদ্যপান
  • পারিবারিক ইতিহাস

স্বাস্থ্যসম্মত জীবনব্যবস্থা বজায় রাখলে অনেক খানি ঝুকি কমানো যায়।যেমন:

  • ব্লাড প্রেসার জানা এবং কন্ট্রোল করা
  • ধূমপান না করা
  • কোলেসটেরল এবং চর্বি জাতীয় খাবার না খাওয়া
  • নিয়ম মাফিক খাবার খাওয়া
  • সতর্ক ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
  • নিয়ম করে হাটা বা হালকা দৌড়ানো
  • দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা
  • মাদক না নেয়া , মদ্য পান না করা

লিখেছেন-

মো: হাফিজুর রহমান

সেশন ২০১৮-১৯

৩ বর্ষ ১ ম সেমিস্টার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *