স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয়ে থাকে কারণ,বাথরুমে ঢুকে গোসল করার সময় আমরা প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজাই যা একদম উচিৎ নয়।এটি একটি ভুল পদ্ধতি।এইভাবে প্রথমেই মাথায় পানি দিলে রক্ত দ্রুত মাথায় উঠে যায় এবং কৈশিক ও ধমনী একসাথে ছিঁড়ে যেতে পারে।ফলস্বরূপ ঘটে স্ট্রোক অতঃপর মাটিতে পড়ে যাওয়া।
স্ট্রোক বা মিনি স্ট্রোকের কারণে যে ধরনের ঝুঁকির কথা আগে ধারণা করা হতো,প্রকৃতপক্ষে এই ঝুঁকি দীর্ঘস্থায়ী এবং আরও ভয়াবহ।গোসলের সময় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।চিকিৎসকদের মতে, গোসল করার সময় কিছু নিয়ম মেনে গোসল করা উচিত।সঠিক নিয়ম মেনে গোসল না করলে হতে পারে মৃত্যুও।গোসল করার সময় প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজানো একদম উচিৎ নয়।কারণ, মানুষের শরীরে রক্ত সঞ্চালন একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় হয়ে থাকে।শরীরের তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে। চিকিৎসকদের মতে, মাথায় প্রথমেই পানি দিলে সঙ্গে সঙ্গে রক্ত সঞ্চালনের গতি বহু গুণ বেড়ে যায়। সেসময় বেড়ে যেতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকিও।তা ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত রক্তচাপের ফলে মস্তিষ্কের ধমনী ছিঁড়ে যেতে পারে।
গোসলের সঠিক নিয়মঃ
প্রথমে পায়ের পাতা ভেজাতে হবে।এরপর আস্তে আস্তে উপর দিকে কাঁধ পর্যন্ত ভেজাতে হবে।তারপর মুখে পানি দিতে হবে।সবার শেষে মাথায় পানি দেওয়া উচিত।এই পদ্ধতি যাদের উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং মাইগ্রেন আছে তাদের অবশ্যই পালন করা উচিৎ।
হিট স্ট্রোক:
যদি বাতাস শুকনা থাকে, বায়ু চলাচল ভাল থাকে, মানুষ ১৩০ ডিগ্রী ফারেনহাইট (৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস) পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে।বায়ু যদি ১০০% আদ্র থাকে, তবে ৯৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট (৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস) পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে।ভারী কাজ কর্মরত একজন মানুষ ৮৫ থেকে ৯০ ডিগ্রী ফারেনহাইট (২৯-৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস) পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে।তাপমাত্রা এর বেশী হলে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
হিট স্ট্রোকের কিছু লক্ষণঃ
- মাথা ধরা
- পেট ব্যাথা,
- সাথে বমি হতে পারে।
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া(সূত্রঃ গাইটন ফিজিওলজি)
প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে তাকে ছায়ায় নিতে হবে।শরীরের ভারী কাপড় খুলে নিয়ে ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে। সম্ভব হলে রোগীকে ফ্যানের নিচে বা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) কক্ষে নিতে হবে।রোগীর বগল ও ঊরুর ভাঁজে বরফ দেওয়া যেতে পারে।থার্মোমিটার দিয়ে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখতে হবে।১০১-১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটে নেমে না আসা পর্যন্ত তাকে ঠান্ডা দেওয়া অব্যাহত রাখতে হবে।
প্রতিরোধে করণীয়ঃ
গরমের সময় শরীরকে পানিশূন্য হতে দেওয়া যাবে না।শরীরে পানির পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে প্রচুর পানি, ডাবের পানি, ওরালস্যালাইন পান করতে হবে।বেশি গরমের সময় ব্যায়াম বা ভারী কায়িক পরিশ্রম বর্জন করুন।গরমে বাইরে বের হলে সাদা বা হালকা রঙের কাপড় পরতে হবে।ঘামের সঙ্গে শরীরের লবণ বেরিয়ে যায়,তাই দুর্বল লাগলে খাবার স্যালাইন পান করতে হবে।
অতি সহজ উপায়ে স্ট্রোক সনাক্ত করা যায়,আমরা সবাই যদি স্ট্রোকের এই ছোট্ট সাধারণ সণাক্তকরণ উপায়টা শিখে ফেলি তবে হয়তো আমরা স্ট্রোকের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের প্রিয়জনদের রক্ষা করতে পারবো।
সহজ তিনটি ধাপঃ–
এস টি ও আর।
এস–স্মাইল ; রোগীকে হাসতে বলুন।
টি– টল্ক ; রোগীকে আপনার সাথে সাথে একটি বাক্য বলতে বলুন।
উদাহরণঃ আজকের দিনটা অনেক সুন্দর।
আর – রাইস হ্যান্ডস ; রোগীকে একসাথে দুইহাত উপরে তুলতে বলুন।
এর কোনো একটিতে যদি রোগীর সমস্যা বা কষ্ট হয়, তৎক্ষণাৎ দেরি না করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং চিকিৎসককে সমস্যাটি খুলে বলুন।রোগীকে বলুন তার জিহবা বের করতে। যদি তা ভাঁজ হয়ে থাকে অথবা যদি তা বেঁকে যে কোনো একদিকে চলে যায়, সেটাও স্ট্রোকের লক্ষণ।তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
লিখেছেন:
চঞ্চল মাহমুদ
Department of Computer science and Engineering discipline, Khulna University
রেফারেন্সঃ
1.https://lifestyle.inquirer.net/253684/heart-attacks-strokes-happen-bathroom/
2.https://www.ninds.nih.gov/Disorders/Patient-Caregiver-Education/Hope-Through- Research/Stroke-Hope-Through-Research
3.https://www.who.int › resourcesPDF
Web results
4.Avoiding Heart Attacks and Strokes – WHO | World Health Organization
5.https://www.bd-pratidin.com/life/2020/05/29/534012
6.https://www.morningringer.com/health/578/
7.https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%9F
-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%95
-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%80
-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8
8.https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/heat-stroke/diagnosis-treatment/drc- 20353587
9.https://www3.paho.org › newslette
10. Heat waves: Is the health sector prepared? – PAHO/WHO