বাঙালির ঐতিহ্যের সাথে মিশে থাকা এই খাবারটি সচারাচর খাওয়া না হলেও পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ এখন না হলেই নয়। বাংলা প্রবাদে আছে,” পান্তা ভাতের জল, তিন পুরুষের বল”। আসলেই কি পান্তা ভাতের পুষ্টিগুন রয়েছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
রান্না করা ভাত সাধারনত ৮-১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখার মাধ্যমে গাঁজন প্রক্রিয়ায় সহজ পাচ্য পান্তা ভাতে পরিনত হয়। এই প্রক্রিয়ায় ভাতে থাকা পুষ্টিকনা খুব সহজেই দেহে প্রবেশ করতে পারে।
পান্তাভাতে যা রয়েছেঃ
শর্করা,আয়রন,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক, ফসফরাস, ভিটামিন বি-২,বি-১২,ল্যাকটিক এসিডসহ আরো নানা পুষ্টিকনা।
উপকারিতাঃ
১.রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ায়,যেহেতু এতে আয়রন রয়েছে।
২.এতে রয়েছে বিটা সিটোস্টেরল, কেম্পেস্টেরলের মতো মেটাবোলাইটস যা শরীরের প্রদাহ কমায় এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৩.আইসোরহ্যামনেটিন সেভেন- গ্লুকোসাইড ক্ল্যাভোনয়েডের মত মেটাবোলাইটস রয়েছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৪. এটিকে বিউটি সিক্রেট অফ এশিয়া বলা হয় কারন এতে থাকা পুষ্টিগুন কোলাজেন তৈরীতে সাহায্য করে যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়িয়ে ত্বক করে মসৃন,টানটান।
৫. এতে প্রচুর পানি থাকায় রিহাইড্রেশনে সাহায্য করে। এটি বডি রিহাইড্রেটিং ফুড হিসেবে পরিচিত।
৬.অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয়।পিএইচ ব্যালান্স ঠিক রাখে।
৭.এতে থাকা ল্যাকটিক এসিড স্তন্যপান করানো মায়েদের দুগ্ধ উৎপাদনে সাহায্য করে।
৮.সাধারন ভাতের তুলনায় এতে সোডিয়াম তুলনামূলক কম এবং পটাশিয়াম বেশি থাকায় রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। ৯.শরীর সতেজ রাখে এবং তাপের ভারসাম্য বজায় রাখে।
১০.ন্যাচারাল ল্যাকটিক এসিডের কারনে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
১১.এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় কে শক্ত রাখে।
১২. ম্যাগনেসিয়াম শরীরে নিসৃত এনজাইমকে সক্রিয় করতে সাহায্য করে।
১৩.ভিটামিন বি -১২ ক্লান্তি দূর করে।
এটি একটি সাধারন খাবার হলেও এর পুষ্টিগুন অসাধারণ। তাই এই গরমে শরীরকে সতেজ রাখতে পান্তাভাতের জুড়ি নেই।
লিখেছেন-
আরিফা খাতুন
ফার্মেসি ডিপার্টমেন্ট
সেশনঃ ২০১৭-১৮
৪র্থ বর্ষ, ১ম সেমিস্টার