এন্ডোমেট্রিওসিস একটি জটিল রোগ। মাসিকের শুরু থেকে ব্যথা শুরু হয়। মাঝামাঝি সময় প্রবল হয় এমনকি শেষ হয়ে গেলেও কিছু ব্যথা থেকে যায় কয়েক দিন। আবার পরবর্তি চক্রে এটি শুরু হয়। যেসব কারণে এমন হয় তার মধ্যে এন্ডোমেট্রিওসিস অন্যতম।
এই রোগের লক্ষণঃ–
১) ব্যথার ধরনে পরিবর্তন।
২) হঠাৎ কোনো মাসে তীব্র ব্যথা বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দিন ধরে ব্যথা।
৩) মাসিকের বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ব্যথা এবং মাসিকের সময় ব্যথা।
৪) অনিয়মিত মাসিক।
৫) মাসিকের সময় ছাড়াও অন্য সময় তলপেটে ব্যথা।
এন্ডোমেট্রিওসিস এর সময় আমরা যা করিঃ– একে আমরা স্বাভাবিক ধরে নেই, তলপেটে সেক দেই বা ব্যথানাশক বড়ি ইত্যাদি খাই।
এর ফলাফলসরুপ যা হয়ঃ– এন্ডোমেট্রিওসিস শনাক্ত হতে আট থেকে দশ বছর পেরিয়ে যায়। এই বিলম্ব আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় ফলে রোগটি আরো জটিল হয় ব্যথা আরো তীব্র হয়। গর্ভধারণের সমস্যার পাশাপাশি আরও নানা স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মাসিকের সময় ব্যথা ছাড়াও পায়খানা প্রস্রাবের সময় সহবাসের সময় ব্যথা হতে পারে। বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। তলপেটে রক্ত জমাট হয়ে চকলেট সিস্ট হতে পারে।
চিকিৎসাঃ
★ইদানিং নানা রকম ঔষধ ব্যবহৃত হচ্ছে কখনো ঔষধ দিয়ে মাসিক কিছুদিন যেমন এক বছর বন্ধ রাখা হয় এভাবে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ পর্দা বা এন্ড্রোমেট্রিয়ামকে আর বাড়তে দেয়া হয়না এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে স্বল্পমাত্রার জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা প্রোজেস্টেরন জাতীয় হরমোন ব্যবহৃত হয়। এছাড়া জিএনআরএইচ জাতীয় ঔষধ ব্যবহৃত হয়।
★ উচ্চমূল্য ও দীর্ঘদিন ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য অ্যাড ব্যাক থেরাপি দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ব্যথা নিরাময়ের জন্য ব্যথানাশক দেওয়া হয়। তবে যেকোনো ঔষধ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়।
★মেডিকেল চিকিৎসা ছাড়াও এর জন্য শল্যচিকিৎসা আছে। অভিজ্ঞ চিকিৎসকের হাতে ল্যাপরোস্কপির মাধ্যমে চকলেট সিস্ট বের করে আনা বা যেখানে অস্বাভাবিক এন্ড্রোমেট্রিয়াল টিস্যু আছে তা পুড়িয়ে ফেলা যায়। এ ছাড়া এই রোগের জন্য বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকলে সেটি চিকিৎসার নানা পদ্ধতি আছে।
প্রতিকারঃ
১| একটু খেলাধুলা বা শরীরচর্চা করলে এন্ডোমেট্রিওসিস এর ব্যথা কম অনুভূত হয়
২| দুগ্ধজাত দ্রব্য,রেডিমিট,কফি, গম থেকে তৈরি খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো
৩| মাসিকের সময় পেটে ব্যথা অনুভব করলেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া ভালো।
লেখকঃ মারিয়া মৌ।
৪র্থ বর্ষ-১ম সেমিস্টার, ৫ম ব্যাচ,
ফার্মেসী বিভাগ, মাভাবিপ্রবি।