সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন

স্বাস্থ্য টিপস

ঘুম বা নিদ্রা হচ্ছে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর দৈনন্দিন কর্মকান্ডের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যখন সচেতন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া স্তিমিত থাকে। নিষ্ক্রিয় জাগ্রত অবস্থার সাথে ঘুমন্ত অবস্থার পার্থক্য হল এ সময়উত্তেজনায় সাড়া দেবার ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং শীতনিদ্রা বা কোমার চেয়ে সহজেই জাগ্রত অবস্থায় ফেরত আসা যায়।

দৈনিক ঘুমের পরিমাণ কেমন হওয়া উচিত:

* নবজাত শিশু : (৩ মাস পর্যন্ত) ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা। যদিও ১১ থেকে ১৩ ঘণ্টাও যথেষ্ট হতে পারে। তবে কোন ভাবেই ১৯ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়।

* শিশু (৪ থেকে ১১ মাস): কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা আর সর্বোচ্চ ১৮ ঘণ্টা।

* শিশু (১/২ বছর বয়স): ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা।

* প্রাক স্কুল পর্ব (৩-৫ বছর বয়স): বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা।

* স্কুল পর্যায় ( ৬-১৩ বছর): এনএসএফ’র পরামর্শ ৯-১০ ঘণ্টার ঘুম।

* টিন এজ (১৪-১৭ বছর): ৮-১০ ঘণ্টার ঘুম প্রয়োজন।
* প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণ (১৮-২৫ বছর): ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
* প্রাপ্ত বয়স্ক (২৬-৬৪ বছর): প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণদের মতোই।
* অন্য বয়স্ক ( ৬৫ বা তার বেশি বছর): ৭/৮ ঘণ্টার ঘুম আদর্শ। কিন্তু ৫ ঘণ্টার কম বা ৯ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়।

বেশি ঘুম শরীরে কিভাবে প্রভাব ফেলে :

১.বিষণ্নতার ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
২.মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা দুর্বল করে।
৩.গর্ভধারণে সমস্যা করে।
৪.ডায়াবেটিসের শঙ্কা বাড়ে।
৫. হৃদযন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
৬.আয়ু কমতে পারে।

কম ঘুম শরীরে কিভাবে প্রভাব ফেলে :

১. পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বা কম হলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বাড়তে পারে।
২. ঘুম কম হলে হার্টের সমস্যা হতে পারে।
৩. ঘুম পর্যাপ্ত না হলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
৪. ঘুম শরীরের ক্ষতি পূরণ ও শক্তি সঞ্চয়ের একটি পন্থা। তাই ঘুম কম হলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়।
৫. মস্তিষ্কে ওরেক্সিন নামের একটি নিউরোট্রান্সমিটার আছে, যা মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ওরেক্সিন উৎপাদনের গতি মন্থর হয়ে যায়।
৬. প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বাড়তে পারে হজমের সমস্যা।

অস্বাভাবিক ঘুম:

নারকোলেপসি একটি অস্বাভাবিক ও অপ্রতিরোধ্য ঘুমের আক্রমণজনিত রোগ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা অপ্রতিরোধ্য ঘুমের আক্রমণে জেগে থাকতে পারে না। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, অস্বাভাবিক ঘুমকাতুরে এই রোগটিতে শতকরা ০.০৬ শতাংশ লোক এই রোগে ভুগে থাকেন।

তথ্যসূত্রঃ
১. Prof. Dr SI Mulick.
২. Wikipedia

লেখকঃ স্বর্না হক
বিভাগঃ ফার্মেসী
সেশনঃ ২০১৮-২০১৯

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *